English
মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪
...

উন্মুক্ত স্থানে ৩১ ডিসেম্বর রাতে অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ: ডিএমপি

ঢাকা মেট্রোপোলিটান পুলিশ

ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, রবিবার: উন্মুক্ত স্থানে ৩১ ডিসেম্বর রাতে যাবতীয় অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগরী পুলিশ, ডিএমপি। 

প্রতি বছর সারা বিশ্বের এক শ্রেণীর তরুণ সমাজ বছরের শেষ রাতকে "থার্টি ফার্ষ্ট নাইট" হিসাবে খুব ঘটা করে উদযাপন করে থাকে। হালে বাংলাদেশেও এর অশুভ একটা ঢেউ এসে আছড়ে পড়েছে। যার প্রভাব আমাদের সমাজে ফেলছে ব্যাপক প্রভাব। তাই ডিএমপি কমিশনারের সময়োচিত ভূমিকা ও উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে যথাযথ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিক ও সুধীজনেরা।

ঢাকা মহানগরী পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, "ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় নগরবাসী স্বতঃস্ফুর্তভাবে বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে অংশগ্রহণ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্ত পূর্ববর্তী বৎসরগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, এ আনন্দ উৎসব উদযাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে।কতিপয় ব্যক্তি আনন্দের আতিশয্যে পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটর সাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা/দূর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্যে অভদ্রজনোচিত আপত্তিকর আচরণ করে থাকে।" 

তিনি বলেন, "এ সকল নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থী কর্মকান্ড একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি করে। এমতাবস্থায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ রাতে পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মোটর সাইকেল চালনাসহ যে কোন ধারণের অশোভন আচরণ এবং বেআইনী কার্যকলাপ হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির যে কোন ধরণের আশঙ্কা রোধকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অত্যন্ত বদ্ধপরিকর।"

ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে নিম্নোক্ত নির্দেশনাসমূহ মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলোঃ  

১। ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোন ধরণের জমায়েত/সমাবেশ/উৎসব করা যাবে না।  

২। উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে কোন ধরণের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না বা নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।  

৩। কোথাও কোন ধরণের আতশবাজি / পট্কা ফোটানো যাবে না।  

৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ১৮.০০ টার পরে বহিরাগত কোন ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।  

৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত এবং শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।  

৬। গুলশান এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলী ক্রসিং এবং আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে এ দু’টি ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।  

৭। একইভাবে উপর্যুক্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সকল নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে বর্ণিত এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।  

৮। সন্ধ্যা ১৮.০০ টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হবে না।  

৯। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে ৩১/১২/২০১৮ তারিখ রাত ২০.০০ টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হলো।  

১০। মাদকদ্রব্যেব অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ৩১/১২/২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ টার পর ঢাকা মহানগরীর কোন বার খোলা রাখা যাবে না।  

১১। ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে... ৩১/১২/২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ টা হতে ০১/০১/২০১৯ তারিখ ভোর ০৬.০০ টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরা জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নগরবাসীর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ উপর্যুক্ত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।  

ট্রাফিক ডাইভার্সন ও পরামর্শ:  

১। গুলশান, বনানী ও বারিধারায় প্রবেশের সকল রাস্তা রাত ২০.০০ টা হতে বন্ধ রাখা হবে। তবে উক্ত এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকগণের প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং আমতলী ক্রসিং(মহাখালী) খোলা রাখা হবে। সেক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকদের রাত ২০.০০ টার মধ্যে উক্ত এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।  

২। রাত ২০.০০ টা হতে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নং রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং উক্ত এলাকাসমূহে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, তবে উক্ত এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।                                 

৩। একইভাবে ৩১/১২/২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ১৮.০০ টা হতে পরদিন ০১/০১/২০১৯ তারিখ ভোর ০৬.০০ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র শাহবাগ ক্রসিং এবং নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পরিচয় প্রদর্শন এবং সনাক্তকরণ পূর্বক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এজন্য পরিচয়পত্র সাথে রাখার জন্য সকলকে বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে।                           

৪। পলাশী ক্রসিং, ভাঙ্কর্য ক্রসিং, বক্শী বাজার ক্রসিং, রোমানা চত্ত্বর ক্রসিং, দোয়েল চত্ত্বর ক্রসিং এবং শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সকল প্রকার গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।                                                                                               

৫। হাইকোর্ট পয়েন্ট হতে আগত সকল প্রকার গাড়ি সমূহ দোয়েল চত্ত্বর বামে মোড় নিয়ে শহিদুল্লাহ হল হয়ে চাঁনখারপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে।                                 

৬। কেউ বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না।                           ৭। সড়ক ব্যবহার সংক্রান্তে যে কোন জরুরি প্রয়োজনে ফোন করুন :

ডিসি ট্রাফিক (নর্থ)-০১৭১৩৩৭৩২২৫, এডিসি ট্রাফিক (নর্থ)-০১৭১৩৩৭৩২২৬, এসি ট্রাফিক (গুলশান)-০১৭১৩৩৯৮৪৯৭, এসি ট্রাফিক (উত্তরা)-০১৭১৩৩৯৮৪৯৮, ডিসি ট্রাফিক (সাউথ)-০১৭১৩৩৭৩২২৩, এডিসি ট্রাফিক (সাউথ)-০১৭১৩৩৭৩২২৪, ডিসি (গুলশান)-০১৭১৩৩৭৩১৬৬ ও ডিসি (উত্তরা)-০১৭১৩৩৭৩১৫৬।  

যে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হলো। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সহায়তা করার জন্য সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা যাচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ইংরেজি নববর্ষ-২০১৯ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে সম্মানিত নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে।




মন্তব্য

মন্তব্য করুন